যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী কৃত্রিম গর্ভ তৈরিতে সফল হওয়ার দাবি করেছেন। তাদের দাবি, অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে ভবিষ্যতে এই কৃত্রিম গর্ভ ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে ভেড়ার ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এই কৃত্রিম জরায়ু যন্ত্রের সাফল্য পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীদের আশা, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এটি মানুষের জন্যও ব্যবহার করা যাবে।
এই কৃত্রিম গর্ভাধার একটি স্বচ্ছ প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে তৈরি। যার ভেতরে কৃত্রিম অ্যামোনিয়োটিক ফ্লুইড ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে এর ভেতরের অবস্থা জরায়ুর পরিবেশের মতোই হয়। অর্থাৎ মায়ের গর্ভে যে পরিবেশে শিশু বেঁচে থাকে অনেকটা সেরকম। এই যন্ত্রের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে শিশুর ফুসফুস ও অঙ্গ-প্রতঙ্গ বেড়ে ওঠে।
বর্তমানে যেসব অপরিণত শিশু ২৩ সপ্তাহের মধ্যে জন্মলাভ করে তাদের ইনকিউবেটরে রাখা হয়। প্রয়োজনে এসব শিশুদের শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য ভেন্টিলাইজেশন দেওয়া হয়। কিন্তু এরফলে শিশুদের ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিপ্রস্ত হয়।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, অপরিণত শিশুদের ফুসফুস এবং অন্যান্য প্রত্যঙ্গ যাতে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে সে জন্যেই তারা এমন গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষকদলের প্রধান সিএইচওপি (Center for Fetal Research in the Center for Fetal Diagnosis and Treatment at Children’s Hospital of Philadelphia) এর সার্জন অ্যালান ফ্লেইক জানিয়েছেন, ভেড়া আর মানুষের গর্ভাবস্থা এবং সময় প্রায় কাছাকাছি। সেজন্যেই প্রথমে ভেড়ার ওপর পরীক্ষাটি চালানো হয়।
তিনি বলেন, ‘২৩ থেকে ২৮ সপ্তাহের সময়ে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়। যদি আমরা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি তাহলে তা হবে অকালে জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’
ন্যাচার কমিউনিকেশনস জার্নালেও এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা ৬টি ভেড়া শাবকের উপর এই পরীক্ষা চালিয়ে সফল হয়েছেন। তাদের ধারণা, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে মানুষের ওপরও এই গর্ভযন্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই কৃত্রিম গর্ভ ব্যবহার করে ২৩ সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের কোনো যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই পরিণত করা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন। এরফলে কৃত্রিম গর্ভে থাকা শিশুরা স্বাভাবিক নিয়মেই ২৮ সপ্তাহে চোখ মেলে তাকাবে এবং শ্বাস নিতে পারবে। ৪০ সপ্তাহ পর তাদের কৃত্রিম জরায়ু থেকে বের করে আনাও সম্ভব হবে।
from ICT Shongbad http://ift.tt/2paoxpO
Comments
Post a Comment